শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে পবিত্র শাবান মাস গণনা শুরু হয়েছে। এর ফলে ১৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে শবে বরাত পালিত হবে। ৩০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
শবে বরাতের মাহাত্ম্য
শাবান মাসের একটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ রাত হলো শবে বরাত। হাদিসে একে বলা হয়েছে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’, অর্থাৎ ১৫ শাবানের রাত। ‘শবে বরাত’ ফারসি শব্দ, যেখানে ‘শব’ অর্থ রাত এবং ‘বরাত’ অর্থ মুক্তি বা নাজাত। ফলে শবে বরাতের অর্থ দাঁড়ায় মুক্তির রজনী।
এই রাত নিঃসন্দেহে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। তবে এ নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি বা অতিরঞ্জন যেমন অনুচিত, তেমনই এর ফজিলতও অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস
হজরত আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন—
"শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে মহান আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন। তিনি মুশরিক (অর্থাৎ যারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করে) এবং সেই ব্যক্তিকে, যে তার মুসলিম ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন।"
(মুসনাদে বাজজার: ৮০, মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৬৬৪৬)
শবে বরাতে নবীজির আমল
হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন—
*"একবার রাসুলুল্লাহ (স.) রাতে নামাজে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ সেজদা করলেন যে, আমার মনে হলো তিনি হয়তো ইন্তেকাল করেছেন। আমি তখন উঠে তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। দেখলাম, তা নড়ল।
যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন ও নামাজ শেষ করলেন, তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘হে আয়েশা, তুমি কি মনে করেছ, আল্লাহর রাসুল তোমার হক নষ্ট করবেন?’
আমি বললাম, ‘না, হে আল্লাহর রাসুল। তবে আপনার দীর্ঘ সেজদার কারণে আমার আশঙ্কা হয়েছিল যে, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কি না।’
তখন নবীজি (স.) বললেন, ‘তুমি কি জানো এটি কোন রাত?’ আমি বললাম, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভালো জানেন।’
রাসুলুল্লাহ (স.) তখন ইরশাদ করলেন, ‘এটি হলো অর্ধ-শাবানের রাত (শবে বরাত)। এ রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দার প্রতি মনোযোগ দেন, ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ দান করেন এবং যারা বিদ্বেষ পোষণ করে, তাদেরকে তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন।’”*
(শুআবুল ঈমান, বায়হাকি: ৩/৩৮২-৩৮৩; তাবারানি: ১৯৪)