মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো (ডিআর কঙ্গো)তে সংঘটিত সহিংসতায় জাতিসংঘের ১৩ জন শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৯ জনই দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিক। এই সংঘর্ষটি বিদ্রোহী এম২৩ গোষ্ঠীর সঙ্গে ঘটে, যা কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলীয় গোমা শহরের আশেপাশে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা গোমায় বিদ্রোহী যোদ্ধাদের অগ্রযাত্রাকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করার সময় ৯ জন সেনা নিহত হয়েছে। এছাড়া, নিহত অন্য শান্তিরক্ষীদের মধ্যে ৩ জন মালাউইয়ান এবং ১ জন উরুগুয়ান সেনাও রয়েছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সহিংসতা বন্ধের জন্য একটি বৈশ্বিক আহ্বান জানিয়েছেন এবং ডিআর কঙ্গো ও রুয়ান্ডার নেতাদের সঙ্গে আলাপ করেছেন। বিবিসি জানায়, সংঘাতের তীব্রতার কারণে জাতিসংঘ অপ্রয়োজনীয় কর্মীদের গোমা থেকে সরিয়ে নিচ্ছে। গোমা শহরে প্রায় ১০ লাখ মানুষ বসবাস করছে, এবং এম২৩ গ্রুপ কঙ্গোলিজ সৈন্যদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে রক্তপাত এড়ানোর চেষ্টা করছে।
ডিআর কঙ্গো রুয়ান্ডাকে অভিযুক্ত করেছে যে, বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সহায়তা দেওয়ার জন্য রুয়ান্ডা তাদের সমর্থন প্রদান করছে। এমন পরিস্থিতিতে, ম্যাক্রোঁ কঙ্গো ও রুয়ান্ডার নেতাদের সঙ্গে পৃথক ফোনকলে সংঘাত বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, রুয়ান্ডার সেনারা কঙ্গোর সীমান্তে জড়ো হচ্ছে, এবং তাদের যে কোনো মুহূর্তে কঙ্গোতে হামলা চালানোর সম্ভাবনা রয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানাচ্ছে, রুয়ান্ডার সেনারা এম২৩ গোষ্ঠীকে গোমা দখলে সহায়তা করতে পারে। ইতোমধ্যে রুয়ান্ডার সেনারা গোপনে কঙ্গোতে প্রবেশ করেছে।
এখন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কঙ্গোর পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার একটি জরুরি বৈঠক আয়োজন করবে। এর আগেই, রুয়ান্ডা এবং বিদ্রোহীরা গোমা দখলের পরিকল্পনা করছে। সংবাদমাধ্যম অবজারভারকে দেওয়া একটি সূত্র জানিয়েছে, রুয়ান্ডা তাদের সেনাদের সীমান্তে জড়ো করেছে এবং গিসেনি শহরে বেশিরভাগ সিনিয়র কমান্ডার অবস্থান নিয়েছেন, যা গোমা সীমান্ত থেকে মাত্র এক মাইল দূরে অবস্থিত।
২০১২ সালেও গোমা শহর বিদ্রোহীরা দখল করেছিল, এবং সে সময় আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বিদ্রোহীরা শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তবে, গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, এবার রুয়ান্ডা ও বিদ্রোহীরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই গোমা দখল করতে চায়।