অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত রঙিন চালবাংলাদেশের কৃষি খাতে ধান ও চালের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং পুষ্টিমান উন্নত করার জন্য বিভিন্ন গবেষণা চলছে। সম্প্রতি রঙিন চাল নিয়ে নতুন ধরনের গবেষণা শুরু হয়েছে, যা খাদ্যগুণ, ঔষধি গুণাবলী এবং অর্থনৈতিক উপকারিতা নিয়ে আলোচনায় এসেছে। এই রঙিন চাল আমাদের খাদ্যশৃঙ্খলকে সমৃদ্ধ করতে সহায়তা করতে পারে।
রঙিন চালের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এর পুষ্টিগুণ। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আঁশ, আয়রন এবং ভিটামিন বি পাওয়া যায়। বিশেষভাবে এতে থাকা অ্যান্থোসায়ানিন নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এছাড়া, এটি ক্যান্সার প্রতিরোধেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে গবেষকরা দাবি করেছেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির এবং তার গবেষক দল এই রঙিন চালের চাষ পদ্ধতি, ফলন ও পুষ্টিগুণ নিয়ে তিন বছরের গবেষণা সম্পন্ন করেছেন। এই গবেষণায় আরও সহায়তা করেছেন অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন-২, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস এবং সাগরিকা খাতুন।
ড. ছোলায়মান আলী ফকির জানান, রঙিন চাল (Oryza sativa L.) প্রথমে পাহাড়ি অঞ্চলে এবং উদ্ভাবনী কৃষকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে বর্তমানে এটি সাধারণ মানুষের মধ্যেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই চালের রঙ লাল, কালো, বাদামি অথবা বেগুনি হতে পারে। তিনি বলেন, তারা মূলত লাল ও কালো রঙের চাল নিয়ে গবেষণা করেছেন এবং এর পুষ্টিগুণের মাত্রা নির্ধারণ করেছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, সাদা চালের তুলনায় কালো চালের ব্রাণে ২-৩ গুণ বেশি খনিজ পদার্থ বিশেষত আয়রন ও জিংক রয়েছে। এদের বাইরের আবরণে অ্যান্থোসায়ানিন এবং অন্যান্য ফাইটো-কেমিক্যাল উপাদান রয়েছে, যা এই চালকে অন্যদের থেকে আলাদা করে। অ্যান্থোসায়ানিনের কারণে ব্রাণের রং লাল হয়ে থাকে।
রঙিন চালের পুষ্টিগুণের বিষয়ে ড. ফকির বলেন, এই চাল শুধু দেখতে সুন্দরই নয়, এটি অসাধারণ পুষ্টিগুণ ও ঔষধি গুণাবলী দিয়ে পূর্ণ। কালো, লাল, বেগুনি কিংবা বাদামি রঙের এই চাল শুধু তার বাহারি চেহারা