সম্প্রতি প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন তার লাইভ টকশোতে দীর্ঘদিন আড়ালে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শরিফুল হক ডালিম (বীর বিক্রম)কে হাজির করেন। এবার, শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত আরেক আসামি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) এম রাশেদ চৌধুরীকে লাইভে আনার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
২০ জানুয়ারি, সোমবার, ইলিয়াস হোসেন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ ঘোষণা দেন। তিনি লিখেন, আগামী ২৪ জানুয়ারি, শুক্রবার, বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় সরাসরি তার ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ সম্প্রচারিত হবে। পোস্টের সঙ্গে রাশেদ চৌধুরীর একটি ছবিও যুক্ত করেন তিনি।
সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
১৯৬৯ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) এম রাশেদ চৌধুরী ১৯৭৬ সালে দ্বিতীয় সচিব হিসেবে জেদ্দায় বাংলাদেশের মিশনের দায়িত্ব পান। এরপর তিনি বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক পদে নিযুক্ত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতায় আসার পর তাকে টোকিও থেকে ঢাকায় ফেরত আসতে বলা হয়, তবে তিনি দেশে ফিরে না এসে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং পরে তাকে বরখাস্ত করা হয়। ২০১০ সালে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া শেষে রাশেদ চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়।
রাশেদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে তার পলাতক অবস্থায় ১৯৯৮ সালে নিম্ন আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয় এবং ২০০৯ সালে উচ্চ আদালত ওই রায় বহাল রাখে। ২০১০ সালে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলেও রাশেদ চৌধুরীসহ বিদেশে পলাতক অন্য আসামিদের দণ্ড কার্যকর হয়নি। তিনি বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে নিরাপদে আছেন। বাংলাদেশের সরকার তাকে ফেরত আনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেছে।
২০১৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি প্রোগ্রামে রাশেদ চৌধুরীকে অপমান করে বের করে দেওয়া হয়।
এদিকে, গত ৫ ডিসেম্বর, মেজর (অব.) শরিফুল হক ডালিমকে লাইভে এনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন ইলিয়াস হোসেন। তার ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত টকশোটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। টকশোতে তিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য ইতিহাস তুলে ধরেন।