ফার্মেসিগুলো এখন মাল্টিভিটামিন এবং খাদ্যতালিকাগত সাপ্লিমেন্টে সয়লাব। ভিটামিন ডি ক্যাপসুল থেকে জিঙ্ক ট্যাবলেট পর্যন্ত, অনেকেই এগুলোকে খাদ্যতালিকার ঘাটতি পূরণের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেন। যদিও কিছু ক্ষেত্রে সাপ্লিমেন্ট উপকারী হতে পারে, অধিকাংশ সময় এগুলো অতিরিক্ত ব্যবহৃত হয়। প্রাকৃতিক ও পুষ্টিকর খাবার সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজনীয়তা কমাতে এবং দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য উপকারিতা দিতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, সাপ্লিমেন্টের পরিবর্তে কোন খাবারগুলো বেছে নেওয়া যেতে পারে:
১. ভিটামিন সি
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, ক্ষত নিরাময় এবং হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ভিটামিন সি অপরিহার্য। সাপ্লিমেন্টের বদলে কমলা, লেবু, আঙুর, স্ট্রবেরি, বেল মরিচ, কিউই খেতে পারেন। অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেসের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কাকাডু পামে কমলার তুলনায় ৭৫ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে।
২. ভিটামিন ডি
হাড়ের বিকাশ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত সূর্যের আলো না পেলে সাপ্লিমেন্টের পরিবর্তে স্যামন, ম্যাকেরেল, ডিমের কুসুম এবং ফোর্টিফাইড দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
৩. ক্যালসিয়াম
হাড় ও দাঁতের গঠনে ক্যালসিয়াম অপরিহার্য। সাপ্লিমেন্টের বদলে দুধ, দই, পনির, টোফু, বাদাম, পালং শাক এবং কেল জাতীয় শাক-সবজি বেছে নিন। চিয়া সিডও ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস।
৪. আয়রন
আয়রনের ঘাটতি পূরণে লাল মাংস, ডাল, মটরশুটি ও পালং শাক খেতে পারেন। আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার যেমন লেবু বা কমলা খেলে শোষণ বৃদ্ধি পায়।
৫. জিঙ্ক
ত্বক, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং কোষের বৃদ্ধির জন্য জিঙ্ক গুরুত্বপূর্ণ। সাপ্লিমেন্টের পরিবর্তে কুমড়োর বীজ, ছোলা এবং কাজু খাদ্যতালিকায় যোগ করুন।
৬. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড
হৃদপিণ্ড এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড অপরিহার্য। আখরোট, তিসি, চিয়া সিড এবং স্যামনের মতো ফ্যাটি মাছ এ ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
৭. ম্যাগনেসিয়াম
ম্যাগনেসিয়াম স্নায়ু, পেশী সংকোচন, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং গ্লুকোজ বিপাকে সাহায্য করে। ঘুমের মান উন্নত করতেও এটি কার্যকর। গাঢ় শাক-সবজি, বীজ, ডার্ক চকোলেট, কলা, বাদাম এবং গোটা শস্য ম্যাগনেসিয়ামের চমৎকার উৎস।
৮. ভিটামিন বি১২
ভিটামিন বি১২-এর জন্য সাপ্লিমেন্ট না খেয়ে মাংস, মাছ, ডিম এবং দুগ্ধজাত পণ্য খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এটি স্নায়ুর কার্যক্রম এবং শক্তি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে প্রাকৃতিক উৎস থেকে পুষ্টি গ্রহণ করলে সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই হ্রাস পায়। তাই সাপ্লিমেন্টের পরিবর্তে প্রাকৃতিক, পুষ্টিকর খাবারের ওপর জোর দিন।