গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। শনিবার ভোরে এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "ইসরায়েলের সরকার জিম্মি ফেরত পরিকল্পনার অনুমোদন দিয়েছে। আগামীকাল রবিবার থেকে এটি কার্যকর হবে।"
এদিকে ইসরায়েলের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক পৃথক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন রবিবার, বিভিন্ন কারাগার থেকে ৯৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। তাদের মধ্যে ৬৯ জন নারী, ১৬ জন পুরুষ এবং ১০ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। মুক্তি প্রত্যাশী ৯৫ জনের নামের তালিকাও প্রকাশ করেছে মন্ত্রণালয়।
গত বুধবার কাতারের রাজধানী দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি জানান, গাজা উপত্যকায় দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে হামাস এবং ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা।
তবে বৃহস্পতিবার চুক্তির অনুমোদন এবং ইসরায়েলি পার্লামেন্টে ভোটাভুটির কথা থাকলেও, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, হামাস সব শর্তে সম্মত না হওয়া পর্যন্ত ভোটাভুটির আয়োজন করবে না তার মন্ত্রিসভা। ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস শেষ মুহূর্তে চুক্তিতে নতুন শর্ত যোগ করার চেষ্টা করেছে।
হামাসের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়। গোষ্ঠীটির জ্যেষ্ঠ নেতা ইজ্জত আল রিশক এক বিবৃতিতে বলেন, "মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর ও বাস্তবায়নে হামাস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস ও তার মিত্রগোষ্ঠী প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদ। এতে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হন, এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় তীব্র সামরিক অভিযান শুরু করে, যা এখনও চলছে। ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। এছাড়া, গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ১৯ লাখ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, যা এই উপত্যকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ।