জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত রাখার জন্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩ (২০২৩ সনের ৪০ নং আইন) বাতিল করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আইন বাতিলের প্রেক্ষাপট
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩’ পাস করে এনআইডি কার্যক্রম ইসির অধীনের পরিবর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীন ন্যস্ত করার প্রস্তাব করেছিল। তবে, নতুন আইন কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় গেজেট বিজ্ঞপ্তি এখনো জারি হয়নি। ফলে এনআইডি কার্যক্রম এখনও ইসির অধীনেই পরিচালিত হচ্ছে।
ইসি জানায়, সংবিধানের ১১৯(১) অনুচ্ছেদ এবং ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯ অনুযায়ী ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম ইসির দায়িত্ব। এছাড়া ভোটার তালিকা তৈরির জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায়, ভোটার তালিকা তৈরির প্রক্রিয়ায় পাওয়া তথ্য থেকেই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি হয়।
আইন বাতিলের দাবির সূত্রপাত
২০২৩ সালের আইনটি কার্যকর হলে এনআইডি কার্যক্রম ইসির অধীনে না থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের আওতায় যেত। তবে, সুশীল সমাজ, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা এবং সাধারণ জনগণ শুরু থেকেই এই কার্যক্রমটি ইসির অধীনে রাখার দাবি জানিয়ে আসছিল।
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা
গতকাল (বুধবার) নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে পাঠানো হয়। এতে ইসি এনআইডি কার্যক্রম তাদের অধীনে রাখার যৌক্তিকতা তুলে ধরে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়:
ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়ন সংবিধান ও বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ইসির দায়িত্ব।
জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে একই ভোটার তালিকা ব্যবহৃত হয়।
২০২৩ সালের আইনটি গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কার্যকর না হওয়ায় আইনি ভিত্তি তৈরি হয়নি।
আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত
চিঠির প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার আইনটি বাতিল করা হয়। এর ফলে, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম আগের মতোই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই থাকবে।
এটি জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং জাতীয় নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচন পরিচালনায় ইসির ভূমিকা আরও সুসংহত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।