যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য টিউলিপ সিদ্দিক: সমালোচনা ও পটভূমি
যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক সাম্প্রতিক সময়ে বিতর্কিত অভিযোগের মুখে পড়ে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বিভিন্ন সূত্র বলছে, টিউলিপের এই পরিস্থিতি আংশিকভাবে তার পরিবারের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার ফল।
টিউলিপ সিদ্দিক ও আওয়ামী লীগের সম্পর্ক
টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে। আওয়ামী লীগের জন্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে টিউলিপ দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত মুখ এবং প্রভাবশালী প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনার সরকার পতন এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ টিউলিপের ওপরও প্রভাব ফেলেছে।
দুর্নীতির অভিযোগ ও যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিত্ব হারানো
টিউলিপের বিরুদ্ধে মূলত দুটি বিতর্ক রয়েছে:
1. লন্ডনের ফ্ল্যাট ইস্যু: লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকায় একটি ফ্ল্যাট বিনামূল্যে পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও টিউলিপ দাবি করেছেন, ফ্ল্যাটটির উৎস সম্পর্কে তিনি অবগত ছিলেন না।
2. বাংলাদেশি প্রকল্প থেকে দুর্নীতি: শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় টিউলিপের সঙ্গে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে আর্থিক দুর্নীতির যোগসূত্রের অভিযোগও উঠেছে।
যুক্তরাজ্যের তদন্ত ও পদত্যাগ
যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিত্বের মানদণ্ডবিষয়ক উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাসের তদন্তে টিউলিপের ফ্ল্যাটের উৎস নিয়ে অস্পষ্টতা উঠে আসে। তদন্তে দেখা যায়, টিউলিপ তার সম্পত্তি বিবরণীতে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে টিউলিপ নিজে ১৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ
টিউলিপের পদত্যাগের পর থেকে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও পরিবার নিয়ে আলোচনা তীব্রতর হয়েছে। বাংলাদেশি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দাবি করেছেন, টিউলিপের ব্যবহার করা সম্পত্তি এবং সংশ্লিষ্ট দুর্নীতির বিষয়ে আরও তদন্ত হওয়া উচিত।
টিউলিপ সিদ্দিকের মন্ত্রিত্ব হারানো কেবল তার ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়; বরং এটি তার পরিবারের আন্তর্জাতিক প্রভাব এবং আওয়ামী লীগের অবস্থানের ওপরও বড় আঘাত হেনেছে।