ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর আক্রমণে রবিবার (১২ জানুয়ারি) পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬,৫৬৫ জন। আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ৯ হাজারের বেশি।
নতুন হামলার বিস্তারিত:
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও ২৮ জন নিহত এবং ৮৯ জন আহত হয়েছেন। এই নৃশংস হামলায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষের সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। তাদের উদ্ধারে কর্মীরা প্রচণ্ড বাধার মুখোমুখি হচ্ছেন।
মানবিক সংকট ও ক্ষয়ক্ষতি:
বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি: ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখের বেশি মানুষ গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
ধ্বংস ও ক্ষয়ক্ষতি: গাজার ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। স্কুল, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবির, ধর্মীয় উপাসনালয়—কোনো স্থানই রক্ষা পায়নি।
খাদ্য ও পানি সংকট: জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজার ৮৫ শতাংশ মানুষ এখন বাস্তুচ্যুত, এবং খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সামগ্রীর চরম সংকটে ভুগছেন।
ধ্বংসযজ্ঞের প্রকৃত চিত্র:
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মতে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ। তাদের উদ্ধারের জন্য আন্তর্জাতিক সাহায্যের প্রয়োজন। তবে ইসরায়েলের সামরিক বাধার কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:
জাতিসংঘ: যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও ইসরায়েলের হামলা বন্ধ হয়নি।
আইনি অভিযোগ: ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পটভূমি:
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে। এ হামলায় গাজা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ বলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো মনে করছে।
এই মানবিক সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।