বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের অগ্রাধিকারগুলো পরিবর্তিত হয়। অন্যদের প্রভাবিত করার বা যুগের ট্রেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে চলার তাড়া ম্লান হয়ে যায় এবং আমরা শান্তি, পরিপূর্ণতা এবং সুখ খুঁজে পাওয়ার দিকে বেশি মনোযোগ দিতে শুরু করি। মনোবিজ্ঞান পরামর্শ দেয় যে, বয়স বাড়ানোর সাথে সাথে আরও সুখী হতে চাইলে আমাদের মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশা কমিয়ে আনতে হবে। অন্যদের কাছ থেকে বেশি আশা করলে কেবল হতাশা বাড়ে। তাহলে, আমাদের কী কী আশা করা বন্ধ করা উচিত? চলুন, বিস্তারিত জানি-
১. অন্যরা আপনার মনের কথা পড়বে বলে আশা করা বন্ধ করুন
আমরা অনেক সময় মনে করি, মানুষ আমাদের মনের কথা বুঝে যাবে। তবে বাস্তবে, কেউ অন্যের মন পড়তে পারে না। তাই, আপনি যা চান তা স্পষ্টভাবে বলুন। সাহায্য, মনোযোগ, বা সহানুভূতি যাই হোক, আপনার প্রয়োজন কী তা স্পষ্টভাবে জানানো ভালো।
২. অন্যদের কাছ থেকে নিখুঁততা আশা করা বন্ধ করুন
অন্যদের পারফেক্ট হওয়ার আশা করা প্রায়ই হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রত্যেকেরই কিছু ত্রুটি রয়েছে এবং ভুল করা মানুষের স্বভাব। তাই, অন্যদের নিখুঁত হতে চাপ দেওয়া উচিত নয়। তাদের বৈচিত্র্য এবং অসম্পূর্ণতাকে স্বীকার করুন, যা তাদের আরও বিশেষ ও প্রেমময় করে তোলে।
৩. মানুষ সর্বদা আপনার জন্য উপলব্ধ থাকবে বলে আশা করা বন্ধ করুন
আজকের দ্রুতগতির জীবনে, কেউ সবসময় আপনার জন্য উপলব্ধ থাকবে না। প্রত্যেকেরই কাজ, পরিবার এবং ব্যক্তিগত দায়িত্ব রয়েছে। যখন আপনি এটা আশা করা বন্ধ করবেন, তখন সম্পর্কগুলো আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় ও বোঝাপড়া পূর্ণ হবে। মানুষকে তাদের প্রয়োজনীয় স্পেস দিন, এতে উভয়ের জন্যই উপকার হবে।
৪. মানুষ সবসময় আপনার দৃষ্টিভঙ্গী বুঝতে পারবে বলে আশা করা বন্ধ করুন
প্রত্যেকেরই ভিন্ন অভিজ্ঞতা ও পটভূমি রয়েছে, এবং দৃষ্টিভঙ্গীও আলাদা। অন্যরা সবসময় আপনার দৃষ্টিভঙ্গী বুঝবে বা একমত হবে, এমন আশা করা ঠিক নয়। পার্থক্যগুলোকে শেখার এবং বেড়ে ওঠার সুযোগ হিসেবে দেখুন, মতবিরোধ নয়। যখন আপনি এই বাস্তবতা মেনে নেন, তখন মানুষের সাথে সংযোগ স্থাপন করা এবং সাধারণ ভিত্তি খোঁজা সহজ হয়ে যায়।
৫. অন্যরা আপনাকে খুশি করবে বলে আশা করা বন্ধ করুন
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা প্রায়ই নিজের সুখের জন্য অন্যদের ওপর নির্ভর করি—বন্ধু, পরিবার বা আপনজনদের উপর। কিন্তু, আসল কথা হল, সুখ নিজেই খুঁজে নিতে হয়। অন্যদের ওপর নির্ভর করে সুখ লাভ করা আপনার অসন্তুষ্টি বাড়াতে পারে। তাই, নিজের আনন্দ তৈরির দিকে মনোযোগ দিন। এমন কাজ করুন যা আপনাকে শান্তি দেয়, তা সে শখ, আবেগ বা দৈনন্দিন রুটিন যা আপনার মেজাজ উন্নত করে।