খালেদা জিয়া: গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান দিয়ে যাত্রা করলেন লন্ডনে
উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যাওয়ার আগে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশবাসীর উদ্দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বার্তা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাতার আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি। উড্ডয়নের পর মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া দেশবাসীর প্রতি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সবার কাছে নিজের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন এবং দেশবাসীর মঙ্গল কামনা করেছেন।”
দীর্ঘ কারাবাস ও শারীরিক অবস্থা
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে ছয় বছর আটক রাখা হয়েছিল। এই সময়টায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। আমরা বারবার তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। আল্লাহর রহমতে তিনি আজ চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যেতে পেরেছেন।”
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
মির্জা ফখরুল বলেন, “৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যান। এরপর বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পান এবং তার বিরুদ্ধে থাকা মিথ্যা মামলাগুলো থেকে খালাস পান। বর্তমানে তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেছেন, যা আমাদের জন্য স্বস্তির।”
উন্নত চিকিৎসার পরিকল্পনা
বেগম খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস এবং আর্থ্রাইটিসসহ গুরুতর অসুস্থতায় ভুগছেন। লন্ডনে পৌঁছানোর পর তাকে একটি বিশেষায়িত ক্লিনিকে ভর্তি করা হবে। চিকিৎসা শেষে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তার চিকিৎসা করানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলন
সাত বছর পর লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেখা হবে। তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান এবং তাদের মেয়ে জায়মা রহমানও তাকে স্বাগত জানাবেন।
বিদায় মুহূর্ত
বিমানবন্দরে বিএনপির শীর্ষ নেতারা খালেদা জিয়াকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আব্দুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সেলিম রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
বিদায়বেলায় পথে পথে বিএনপি নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানান। তাদের হাতে ছিল জাতীয় ও দলীয় পতাকা, খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত ফেস্টুন ও ব্যানার।
দেশবাসীর প্রতি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বার্তা দিয়ে খালেদা জিয়া লন্ডন যাত্রা করেছেন। তার অনুপস্থিতিতে বিএনপির নেতৃত্বের কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ রাজনীতি কতটা কার্যকর হয়, তা নজরকাড়া বিষয় হয়ে উঠবে।