আজ ২ জানুয়ারি, বিশ্ব জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ দিবস। বর্তমান বিশ্বে জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং হ্রাস—উভয়ই বিভিন্ন অঞ্চলে সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনো কোনো দেশে জনসংখ্যা বেড়ে ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি করছে, আবার কোথাও জনসংখ্যার হ্রাস অর্থনীতি ও সামাজিক কাঠামোর জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, জনসংখ্যা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে দিবসটি পালিত হয়।
বাংলাদেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের ইতিহাস
বাংলাদেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম শুরু হয় স্বাধীনতার আগেই, বেসরকারি উদ্যোগে। স্বাধীনতার পর সরকার এই কার্যক্রমকে নিজের আওতায় নেয় এবং এক পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এ কার্যক্রমের কার্যকারিতা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। অনেকেই, এমনকি শিক্ষিত ও সচেতন দম্পতিরাও, অধিক সন্তান নিচ্ছেন, যা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যার চিত্র
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। এর মধ্যে ১১ কোটি ৬০ লাখ গ্রামে এবং ৫ কোটি ৩৭ লাখ শহরে বসবাস করেন। জনসংখ্যার ঘনত্ব আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে ২০১১ সালের ৯৭৬ জন থেকে ২০২২ সালে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১,১১৯ জনে উন্নীত হয়েছে।
প্রতিমিনিটে দেশের জনসংখ্যা বেড়ে চলছে প্রায় চার জন করে। এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটারের এই দেশে ১৯৬১ সালে জনসংখ্যা ছিল তিন কোটির কিছু বেশি, যা এখন পাঁচগুণ বেড়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, বর্তমান প্রবৃদ্ধি হার অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে জনসংখ্যা ২০ কোটিতে পৌঁছাবে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির চ্যালেঞ্জ ও করণীয়
দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির এই প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন ব্যাপক সচেতনতা কার্যক্রম, বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে। একইসঙ্গে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমকে আরও জোরদার করতে হবে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে তা দেশের জন্য বড় ধরনের সংকট তৈরি করতে পারে।