১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার
৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লেবাননে ইসরায়েলের ব্যাপক বিমান হামলা, ৩০০ যানবাহন ধ্বংস

শেয়ার করুন

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে রাতভর বিমান হামলায় চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির আল-মাসাইলেহ এলাকায় ভারী যন্ত্রপাতির ইয়ার্ডে বিমান হামলা চালিয়ে ৩০০ টিরও বেশি যানবাহন ধ্বংস করে দিয়েছে দখলদার বাহিনী। এছাড়াও হামলায় একজন সিরীয় নাগরিক নিহত ও দুই নারীসহ অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।

লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (এনএনএ) জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননের আল-মাসাইলেহ এলাকায় অন্তত ১০টি ইয়ার্ড (গুদাম) লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল— যেখানে প্রকৌশল কাজে ব্যবহৃত ভারী যন্ত্রপাতি রাখা ছিল। সংস্থাটি জানায়, হামলায় প্রায় ৩০০ যানবাহন, যার মধ্যে বুলডোজার, এক্সকাভেটরসহ ১০০টির বেশি ছোট ববক্যাট ইউটিলিটি মেশিন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে, যার ফলে আনুমানিক কয়েকশ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।

হামলায় এসব ইয়ার্ডের আশেপাশের বেশ কিছু ভবনসহ অন্যান্য স্থাপনা এবং কাছাকাছি এলাকায় পার্কিং করা বেশ কয়েকটি গাড়িও ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানায় এনএনএ। সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হওয়া এইসব ইয়ার্ড লেবাননের বৃহত্তম ভারী যন্ত্রপাতি প্রদর্শনী স্থানগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বিমান হামলার ফলে এলাকাটির উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতির কারণে আল-মাসাইলেহ সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, ‘দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর অবকাঠামোতে হামলা চালিয়ে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে, যেখানে এই অঞ্চলে তাদের সন্ত্রাসী অবকাঠামো পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে ভারী যন্ত্রপাতি মজুত করেছিল।’

লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন এই হামলার নিন্দা জানিয়ে একে ‘একটি স্পষ্ট আগ্রাসন’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আরও একবার দক্ষিণ লেবানন ইসরায়েলি বর্বর আগ্রাসনের শিকার হলো, কোনো ধরনের যৌক্তিক কারণ বা অজুহাত ছাড়াই।’

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরপরই এই হামলা হওয়ায় ঘটনাটির গুরুত্ব আরও বেশি উল্লেখ করে লেবাননের প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ‘ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এবার লেবাননের দিকে সংঘাত স্থানান্তরিত করার সম্ভাব্য চেষ্টা করছে।’ করেন।

২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের মধ্যে এক বছর ধরে সীমান্ত পারাপারের পর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এই সংঘাত পূর্ণ মাত্রার ইসরায়েলি আগ্রাসনে রূপ নেয়, যার ফলে ৪ হাজারে বেশি লেবানিজ নিহত এবং প্রায় ১৭ হাজার জন আহত হন।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় ২০২৪ সালের নভেম্বরে দুইপক্ষ যুদ্ধবিরতি রাজি হয়। যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করার কথা ছিল। কিন্তু তারা এখনও পর্যন্ত কেবল আংশিকভাবে সৈন্য প্রত্যাহার করেছে এবং পাঁচটি সীমান্ত চৌকিতে সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে।

সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, আনাদোলু

শেয়ার করুন