
সাত বছরের অপেক্ষার অবসান: মা-ছেলের পুনর্মিলন
দীর্ঘ সাত বছর পর মা-ছেলের পুনর্মিলনের এক আবেগঘন মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছে সবাই। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং তার বড় ছেলে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, অবশেষে মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন।
পরিবারে সুখ-দুঃখের স্মৃতি
গত সাত বছর খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের মধ্যে সশরীরে কোনো দেখা হয়নি। এর মধ্যেই তাদের পরিবারে ঘটে গেছে অনেক ঘটনা।
২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো।
ভাইয়ের মৃত্যুতে তারেক রহমান পাশে থাকতে পারেননি, এমনকি শেষবারের মতো দেখতে পারেননি কোকোকে। এই শূন্যতা মা-ছেলের পুনর্মিলনের মুহূর্তে গভীর আবেগের জন্ম দেবে।
এদিকে, তারেক রহমানের সন্তানরা বড় হয়ে গেছেন। দাদির সঙ্গে তাদের দেখা হবে দীর্ঘ সময় পর, যা গোটা পরিবারে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি করবে।
খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা
অবশেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১০টায় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনি ঢাকা ছাড়বেন।
লন্ডনে পৌঁছানোর পর খালেদা জিয়াকে সরাসরি একটি উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করা হবে।
তার যাত্রাকে কেন্দ্র করে বিমানবন্দরে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা।
দীর্ঘ কারাবাস ও মুক্তি
খালেদা জিয়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড প্রাপ্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন।
দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার তার সাজা শর্ত সাপেক্ষে স্থগিত করে সাময়িক মুক্তি দেয়।
এরপর ছয় মাস পরপর মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছিল।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ-আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে নির্বাহী আদেশে তিনি মুক্তি পান। এরপর থেকে বিএনপি তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাত্রার প্রস্তুতি নেয়।
একটি আবেগঘন পুনর্মিলন
খালেদা জিয়ার লন্ডন পৌঁছানোর পর হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অপেক্ষায় থাকবেন তারেক রহমান। দীর্ঘ সাত বছরের অপেক্ষার অবসান হবে মায়ের সঙ্গে দেখা করে। এই পুনর্মিলন শুধু একটি পরিবারে নয়, পুরো দলের জন্যই এক আবেগঘন মুহূর্ত।
খালেদা জিয়ার এই যাত্রা শুধু তার চিকিৎসার জন্য নয়, তারেক রহমানের সঙ্গে একটি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত পুনর্মিলনের সাক্ষী হতে যাচ্ছে। এটি তার পরিবার এবং সমর্থকদের জন্য এক বিশেষ অধ্যায় হয়ে থাকবে।